Bismillahir Rahmanir Rahim :

সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ-১

____________________________________
মহান আল্লাহ মানুষকে এ
পৃথিবীতে খিলাফতের এক সুন্দর দায়িত্ব
দিয়ে পাঠিয়েছেন। আদম আলাইহিস
সালাম ও তার সন্তানাদিকে সর্বপ্রথম এ
দায়িত্ব দেয়া হয়। আদম আলাইহিস
সালামের সন্তান হাবিলের কুরবানী কবুল
হওয়া সম্পর্কে মহান আল্লাহ
ঘোষণা করেন:
﴿ ﺎَﻤَّﻧِﺇ ُﻞَّﺒَﻘَﺘَﻳ ُﻪَّﻠﻟﭐ َﻦﻴِﻘَّﺘُﻤۡﻟﭐ َﻦِﻣ
٢٧ ﴾ ‏[:ﺓﺪﺋﺎﻤﻟﺍ ٢٧ ‏]
নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের নিকট
হতেই (সৎকর্ম) কেবল গ্রহণ করেন।[1]
মূলত: মানুষকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ
হতে বারণ করার এক মহান দায়িত্ব
দিয়ে সৃষ্টির শুরু হতে শুরু করে সর্বশেষ
নবী ও রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতদেরও
প্রেরণ করা হয়েছে। তাই তো পবিত্র
কুরআন সাধারণভাবে সকল উম্মতের অন্যতম
দায়িত্ব ঘোষণা দিয়ে বলেছে:
ۡﻢُﺘﻨُﻛ﴿ َﺮۡﻴَﺧ ۡﺖَﺟِﺮۡﺧُﺃ ٍﺔَّﻣُﺃ ِﺱﺎَّﻨﻠِﻟ
َﻥﻭُﺮُﻣۡﺄَﺗ ِﻑﻭُﺮۡﻌَﻤۡﻟﭑِﺑ َﻥۡﻮَﻬۡﻨَﺗَﻭ ِﻦَﻋ
ِﺮَﻜﻨُﻤۡﻟﭐ ﴾ ‏[ ﻝﺍ :ﻥﺍﺮﻤﻋ ١١٠ ‏]
‘‘তোমরা সর্বোত্তম জাতি, তোমদের
সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের
জন্য। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের
আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজ
হতে নিষেধ করবে। আর আল্লাহর উপর
ঈমান আনয়ন
করবে।” [সূরা আলে ইমরান: ১১০]
অতএব আলোচ্য আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয়
যে, এ মহান দায়িত্বটি আঞ্জাম দেয়ার
মাঝে মানুষের কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
যুগে যুগে এ পৃথিবীতে অসংখ্য নবী-
রাসূলের আগমন ঘটেছে। আল্লাহ
তা‘আলা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেই
ক্ষান্ত হন নি; বরং তাদের হেদায়াতের
জন্য প্রেরণ করেছেন কালের পরিক্রমায়
বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য নবী ও রাসূলকে।
যাঁরা স্ব-স্ব জাতিকে সৎ ও কল্যাণকর
কাজের প্রতি উৎসাহ যুগিয়েছেন এবং অসৎ
ও অকল্যাণকর কাজ হতে নিষেধ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:
ۡﺪَﻘَﻟَﻭ﴿ ﺎَﻨۡﺜَﻌَﺑ ﻲِﻓ ِّﻞُﻛ ٖﺔَّﻣُﺃ ﺎًﻟﻮُﺳَّﺭ
ِﻥَﺃ ْﺍﻭُﺪُﺒۡﻋﭐ َﻪَّﻠﻟﭐ ْﺍﻮُﺒِﻨَﺘۡﺟﭐَﻭ
﴾َۖﺕﻮُﻐَّٰﻄﻟﭐ ‏[ ٣٦:ﻞﺤﻨﻟﺍ ‏]
‘‘নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতির নিকট
রাসুল প্রেরণ করেছি এ মর্মে যে,
তারা আল্লাহর ইবাদত
করবে এবং তাগুতকে পরিত্যাগ
করবে” [2] ।
এখানে তাগুত
বলতে আল্লাহবিরোধী শক্তি, শয়তান,
কুপ্রবৃত্তি এক কথায় এমন সব
কার্যাবলীকে বুঝানো হয়েছে যা সুপ্রবৃত্তি
দ্বারা সম্পন্ন হয় না এবং আল্লাহর
আনুগত্যের পথে বাধা হয়।
আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও একই
উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়েছে।
তাঁকে হেদায়াতের মশাল
হিসেবে যে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন প্রদান
করা হয়েছে তার এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য
হলো, মানুষকে অন্ধকার থেকে আল্লাহর
দিকে আহ্বান করা,
গোমরাহী থেকে হেদায়াতের দিকে,
কুফরীর অন্ধকার হতে ঈমানের আলোর
দিকে আহ্বান জানানো। আল্লাহ
তা‘আলা এ প্রসঙ্গে বলেন,
﴿ ۚﺮٓﻟﺍ ٌﺐَٰﺘِﻛ َﻚۡﻴَﻟِﺇ ُﻪَٰﻨۡﻟَﺰﻧَﺃ َﺝِﺮۡﺨُﺘِﻟ
َﺱﺎَّﻨﻟﭐ ِﺖَٰﻤُﻠُّﻈﻟﭐ َﻦِﻣ ﻰَﻟِﺇ ِﺭﻮُّﻨﻟﭐ
ِﻥۡﺫِﺈِﺑ ۡﻢِﻬِّﺑَﺭ ٰﻰَﻟِﺇ ﺰﻳﺰﻌﻟﺍ ﻁﺍﺮﺻ
ﺪﻴِﻤَﺤﻟﺍ ١ ﴾ ‏[ :ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍ ١ ‏]
‘‘আলিফ-লাম-রা, এ হচ্ছে কিতাব,
আমরা তোমার প্রতি তা নাযিল
করেছি, যাতে তুমি মানুষকে তাদের
রবের অনুমতিক্রমে অন্ধকার
থেকে বের করে আলোর
দিকে ধাবিত করতে পার, এমন
পথে যা প্রবলপরাক্রমশালী,
প্রশংসিতের।’’[3]
এ প্রথিবীতে মানুষের যাবতীয়
কর্মকে যদি শ্রেণীবিন্যাস করা হয়
তাহলে তা হবে ক) সৎকাজ (খ) অসৎকাজ।
আর আখেরাতে এ দু’শ্রেণীর কাজের
জবাবদিহি ও প্রতিদানস্বরূপ জান্নাত ও
জাহান্নাম নির্ধারিত হবে। মহান আল্লাহ
বলেন:
﴿ ﻦَﻤَﻓ َﻝﺎَﻘۡﺜِﻣ ۡﻞَﻤۡﻌَﻳ ٍﺓَّﺭَﺫ ﺍٗﺮۡﻴَﺧ
ۥُﻩَﺮَﻳ ٧ ۡﻞَﻤۡﻌَﻳ ﻦَﻣَﻭ َﻝﺎَﻘۡﺜِﻣ ٖﺓَّﺭَﺫ ﺍّٗﺮَﺷ
ۥُﻩَﺮَﻳ ﴾٨ ‏[:ﺔﻟﺰﻟﺰﻟﺍ ،٧ ٨ ‏]
‘‘যে অনু পরিমাণ ভাল করবে সে তার
প্রতিদান পাবে আর যে অনু পরিমাণ
খারাপ কাজ করবে সেও তার
প্রতিদান পাবে।’’[4]
অতএব প্রতিদান দিবসে সৎকাজের গুরুত্ব
অত্যাধিক। ফলে প্রত্যেকের উচিত সৎকাজ
বেশী বেশী করা এবং অসৎ কাজ
হতে বিরত থাকা।
কুরআনের অন্যত্র মহান আল্লাহ মানুষের এসব
কাজ সংরক্ষণ করা সম্পর্কে বলেছেন:
﴿ َﻦﻴِﺒِﺘَٰﻛ ﺎٗﻣﺍَﺮِﻛ ١١ َﻥﻮُﻤَﻠۡﻌَﻳ ﺎَﻣ
َﻥﻮُﻠَﻌۡﻔَﺗ ١٢ َﺭﺍَﺮۡﺑَﺄۡﻟﭐ َّﻥِﺇ ﻲِﻔَﻟ
ٖﻢﻴِﻌَﻧ ١٣ َﺭﺎَّﺠُﻔۡﻟﭐ َّﻥِﺇَﻭ ﻲِﻔَﻟ ٖﻢﻴِﺤَﺟ
ﺎَﻬَﻧۡﻮَﻠۡﺼَﻳ ١٤ َﻡۡﻮَﻳ ِﻦﻳِّﺪﻟﭐ ١٥ ﺎَﻣَﻭ
ۡﻢُﻫ َﻦﻴِﺒِﺋٓﺎَﻐِﺑ ﺎَﻬۡﻨَﻋ ١٦ ٓﺎَﻣَﻭ َﻚٰﻯَﺭۡﺩَﺃ
ﺎَﻣ ُﻡۡﻮَﻳ ِﻦﻳِّﺪﻟﭐ ١٧ َّﻢُﺛ ٓﺎَﻣ َﻚٰﻯَﺭۡﺩَﺃ
ﺎَﻣ ُﻡۡﻮَﻳ ِﻦﻳِّﺪﻟﭐ ١٨ َﻡۡﻮَﻳ ﺎَﻟ ُﻚِﻠۡﻤَﺗ
ٞﺲۡﻔَﻧ ٖﺲۡﻔَﻨِّﻟ ُﺮۡﻣَﺄۡﻟﭐَﻭ ۖﺎٗٔۡﻴَﺷ ٖﺬِﺌَﻣۡﻮَﻳ
ِﻪَّﻠِّﻟ ١٩ ﴾ ‏[:ﺭﺎﻄﻔﻧﻻﺍ -١١ ١٩ ‏]
‘‘সম্মানিত লেখকবৃন্দ,
তারা জানে তোমরা যা কর, নিশ্চয়
সৎকর্মপরায়ণরা থাকবে খুব
স্বাচ্ছন্দে, আর
অন্যায়কারীরা থাকবে প্রজ্বলিত
আগুনে, তারা সেখানে প্রবেশ
করবে প্রতিদান দিবসে, আর
তারা সেখান থেকে অনুপস্থিত
থাকতে পারবে না, আর
কিসে তোমাকে জানাবে প্রতিদান
দিবস কী? তারপর
বলছি কিসে তোমাকে জানাবে
প্রতিদান দিবস কী? সেদিন
কোনো মানুষ অন্য মানুষের জন্য
কোনো ক্ষমতা রাখবে না, আর
সেদিন সকল বিষয় হবে আল্লাহর
কর্তৃত্বে।’’[5]
পৃথিবীতে মানুষ ধোঁকা প্রবণ, দুনিয়ার
চাকচিক্য ও মোহে পড়ে অনন্ত অসীম দয়ালু
আল্লাহর কথা স্মরণ
থেকে ভুলে যেতে পারে।
সেজন্যে প্রত্যেক সৎ কর্মপরায়ণের উচিৎ
পরস্পর পরস্পরকে সদুপদেশ দেয়া,
সৎকাজে উদ্বুদ্ধ করা এবং অসৎ
কাজে নিষেধ করা। মহান আল্লাহ ধমক
দিয়ে বলেন-
﴿ َٰٓﻱ ُﻦَٰﺴﻧِﺈۡﻟﭐ ﺎَﻬُّﻳَﺃ ﺎَﻣ َﻚِّﺑَﺮِﺑ َﻙَّﺮَﻏ
ِﻢﻳِﺮَﻜۡﻟﭐ ٦ ﴾ ‏[:ﺭﺎﻄﻔﻧﻻﺍ ٦ ]
‘‘হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার
মহান রব
সম্পর্কে ধোঁকা দিয়েছে?”[6]
শুধু ধমক দিয়েই ক্ষ্যান্ত হন নি;
বরং পরিবার পরিজনকে জাহান্নামের
ভয়াবহ শান্তি হতে বাঁচিয়ে রাখারও
নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূরা আত-
তাহরীমে এসেছে-
﴿ ﺎَﻬُّﻳَﺄَٰٓﻳ ْﺍﻮُﻨَﻣﺍَﺀ َﻦﻳِﺬَّﻟﭐ ْﺍٓﻮُﻗ
ۡﻢُﻜﻴِﻠۡﻫَﺃَﻭ ۡﻢُﻜَﺴُﻔﻧَﺃ ﺎَﻫُﺩﻮُﻗَﻭ ﺍٗﺭﺎَﻧ
ُﺱﺎَّﻨﻟﭐ ﺎَﻬۡﻴَﻠَﻋ ُﺓَﺭﺎَﺠِﺤۡﻟﭐَﻭ ٌﺔَﻜِﺌَٰٓﻠَﻣ
ٞﻅﺎَﻠِﻏ ٞﺩﺍَﺪِﺷ ﺎَّﻟ َﻥﻮُﺼۡﻌَﻳ َﻪَّﻠﻟﭐ ٓﺎَﻣ
َﻥﻮُﻠَﻌۡﻔَﻳَﻭ ۡﻢُﻫَﺮَﻣَﺃ ﺎَﻣ َﻥﻭُﺮَﻣۡﺆُﻳ ٦
﴾ ‏[ :ﻢﻳﺮﺤﺘﻟﺍ ٦ ‏]
‘‘হে ঈমানদারগণ!
তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের
পরিবার পরিজনকে আগুন
হতে বাঁচাও, যার
জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর;
যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর
ফেরেশ্তাকূল, যারা আল্লাহ
তাদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছেন
সে ব্যাপারে অবাধ্য হয় না। আর
তারা তাই
করে যা তাদেরকে আদেশ
করা হয়।’’[7]
অতএব বলা যায় যে, বিভিন্নভাবে এ
পৃথিবীতে মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত।
আর তা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায়
হলো পারস্পারিক সৎ ও কল্যাণকর
কাজে সহযোগিতা ও অসৎ এবং গুনাহের
কাজ বর্জন করা। এ মর্মে মহান আল্লাহ
বলেন:
﴿ ْﺍﻮُﻧَﻭﺎَﻌَﺗَﻭ ﻰَﻠَﻋ ٰۖﻯَﻮۡﻘَّﺘﻟﭐَﻭ ِّﺮِﺒۡﻟﭐ
ْﺍﻮُﻧَﻭﺎَﻌَﺗ ﺎَﻟَﻭ ﻰَﻠَﻋ ِﻢۡﺛِﺈۡﻟﭐ
ِۚﻥَٰﻭۡﺪُﻌۡﻟﭐَﻭ ﴾ ‏[ :ﺓﺪﺋﺎﻤﻟﺍ ٢ ]
‘‘তোমরা পূণ্য ও তাকওয়ার
কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর
এবং গুনাহ ও সীমালঙ্ঘণের
কাজে একে অপরকে সহযোগিতা
করো না।”[8]
সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম
পরস্পরের সাথে সাক্ষাত হলে এ
মহতি কাজটির কথা স্মরণ করে দিতেন।
সেজন্য তাদের কেউ কেউ অধিকাংশ সময়
মজলিশ হতে বিদায় বেলায় ও প্রথম
সাক্ষাতে সূরা আছর তেলাওয়াত করতেন
বলে কোনো কোনে বর্ণনায় এসেছে [9] ।
আল্লাহ বলেন-
﴿ ِﺮۡﺼَﻌۡﻟﭐَﻭ ١ َﻦَٰﺴﻧِﺈۡﻟﭐ َّﻥِﺇ ﻲِﻔَﻟ ٍﺮۡﺴُﺧ
٢ ﺎَّﻟِﺇ ْﺍﻮُﻨَﻣﺍَﺀ َﻦﻳِﺬَّﻟﭐ ْﺍﻮُﻠِﻤَﻋَﻭ
ِﺖَٰﺤِﻠَّٰﺼﻟﭐ ِّﻖَﺤۡﻟﭑِﺑ ْﺍۡﻮَﺻﺍَﻮَﺗَﻭ
ْﺍۡﻮَﺻﺍَﻮَﺗَﻭ ِﺮۡﺒَّﺼﻟﭑِﺑ ٣ ﴾ ‏[ :ﺮﺼﻌﻟﺍ ،١
٣]
‘‘সময়ের কসম, নিশ্চয় আজ মানুষ
ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত।
তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান
এনেছে, সৎকাজ করেছে,
পরস্পরকে সত্যের উপদেশ
দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের
উপদেশ দিয়েছে।”[10]
সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজ
হতে নিষেধ রাসূলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এ গুণের
পথিকৃত ছিলেন। তিনি নবুওয়তের
পূর্বে অন্যায় অবিচার রুখতে হিলফুল
ফুযুলে অংশ নিয়েছেন। ছোট
বেলা থেকে মৌলিক মানবীয় সৎ
গুণাবলী তাঁর চরিত্রে ফুটে উঠায় আল-
আমিন, আল সাদিক উপাধিতে তিনি ভুষিত
ছিলেন। তাঁর গুণাবলীর
বর্ণনা দিতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন-
ﻢُﻫُﺮُﻣۡﺄَﻳ﴿ ۡﻢُﻬٰﻯَﻬۡﻨَﻳَﻭ ِﻑﻭُﺮۡﻌَﻤۡﻟﭑِﺑ ِﻦَﻋ
ِﺮَﻜﻨُﻤۡﻟﭐ ُّﻞِﺤُﻳَﻭ ِﺖَٰﺒِّﻴَّﻄﻟﭐ ُﻢُﻬَﻟ ُﻡِّﺮَﺤُﻳَﻭ
ُﻢِﻬۡﻴَﻠَﻋ َﺚِﺌَٰٓﺒَﺨۡﻟﭐ ۡﻢُﻬۡﻨَﻋ ُﻊَﻀَﻳَﻭ ۡﻢُﻫَﺮۡﺻِﺇ
َﻞَٰﻠۡﻏَﺄۡﻟﭐَﻭ ۡﺖَﻧﺎَﻛ ﻲِﺘَّﻟﭐ ۚۡﻢِﻬۡﻴَﻠَﻋ
﴾ ‏[:ﻑﺍﺮﻋﻻﺍ ١٥٧ ‏]
‘‘তিনি সৎকাজের আদেশ করেন
এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ করেন।
মানবজাতির জন্য সকল উত্তম ও
পবিত্র জিনিসগুলো বৈধ করেন
এবং খারাপ বিষয়গুলো হারাম
করেন।’’[11]
আলোচ্য আয়াতের মাধ্যমে তাঁর
রিসালাতের পূর্ণ বর্ণনা ফুটে উঠেছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সে সত্ত্বা, যাঁর কর্মকাণ্ড
সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেন,
তাকে পাঠানো হয়েছে যাতে তিনি
সৎকাজের আদেশ দেন, সকল অসৎ কর্ম
হতে বারণ করেন, সব উত্তম বিষয় হালাল
করেন এবং অপবিত্রগুলো হারাম করেন।
এজন্যে রাসূল নিজেও বলেছেন-
« ﺏ ﺖﺜﻋ ﻡﺭﺎﻜﻣ ﻢﻤﺗﻷ ﻕﻼﺧﻷﺍ »
‘‘আমি সকল পবিত্র
চরিত্রাবলী পরিপূর্ণতা সাধনের
জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’’[12]
শুধু তাই নয় মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠা করে তিনি ‘হিসবা’ নামক
একটি বিভাগের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ
কাজটি আঞ্জাম দিতেন।
পরবর্তীতে খোলাফায়ে রাশেীনের যুগেও
এ বিভাগটি প্রতিষ্ঠিত ছিল।
ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব
হলো সৎকাজের আদেশ দেয়া এবং অসৎ ও
অন্যায় কাজ হতে মানুষকে বারণ করা।
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ
করা মুমিনের গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত
সৎ কাজের আদেশ দান ও
অসৎকাজে বাধা দান মুমিনের অন্যতম
দায়িত্ব। মুমিন নিজে কেবল সৎকাজ
করবে না, বরং সকলকে সে কাজের
প্রতি উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস চালাতে হবে।
কেননা, তারা পরস্পরের বন্ধু। অতএব একবন্ধু
অপর বন্ধুর জন্য কল্যাণ ব্যতীত অন্য কিছু
কামনা করতে পারে না। এদিকে ইঙ্গিত
করে মহান আল্লাহ বলেন-
َﻥﻮُﻨِﻣۡﺆُﻤۡﻟﭐَﻭ﴿ ُﺖَٰﻨِﻣۡﺆُﻤۡﻟﭐَﻭ ۡﻢُﻬُﻀۡﻌَﺑ
ُﺀٓﺎَﻴِﻟۡﻭَﺃ ٖۚﺾۡﻌَﺑ َﻥﻭُﺮُﻣۡﺄَﻳ ِﻑﻭُﺮۡﻌَﻤۡﻟﭑِﺑ
َﻥۡﻮَﻬۡﻨَﻳَﻭ ِﻦَﻋ َﻥﻮُﻤﻴِﻘُﻳَﻭ ِﺮَﻜﻨُﻤۡﻟﭐ
َﺓٰﻮَﻠَّﺼﻟﭐ َﺓٰﻮَﻛَّﺰﻟﭐ َﻥﻮُﺗۡﺆُﻳَﻭ
َﻥﻮُﻌﻴِﻄُﻳَﻭ ۚٓۥُﻪَﻟﻮُﺳَﺭَﻭ َﻪَّﻠﻟﭐ َﻚِﺌَٰٓﻟْﻭُﺃ
ُﻢُﻬُﻤَﺣۡﺮَﻴَﺳ ُۗﻪَّﻠﻟﭐ ٧١ ﴾ ‏[ :ﺔﺑﻮﺘﻟﺍ ٧١ ‏]
‘‘মুমিন নারী ও পুরুষ তারা পরস্পরের
বন্ধু। তারা একে অপরকে যাবতীয়
ভাল কাজের নির্দেশ দেয়, অন্যায় ও
পাপ কাজ হতে বিরত রাখে, সালাত
কায়েম করে, যাকাত পরিশোধ
করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের
আনুগত্য করে। তারা এমন লোক
যাদের প্রতি অচিরেই আল্লাহর রহমত
বর্ষিত হবে।’’[13]
কুরআনের অসংখ্য আয়াতে মুমিনের অন্যতম
চরিত্র-বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত
করা হয়েছে। সকল স্থানে অন্যান্য
গুণাবলীর পাশাপাশি অন্যতম গুণ
হিসেবে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের
নিষেধের অবতারণা করা হয়েছে।
কুরআনে এসেছে:
﴿ َﻥﻭُﺪِﻤَٰﺤۡﻟﭐ َﻥﻭُﺪِﺒَٰﻌۡﻟﭐ َﻥﻮُﺒِﺌَّٰٓﺘﻟﭐ
َﻥﻭُﺪِﺠَّٰﺴﻟﭐ َﻥﻮُﻌِﻛَّٰﺮﻟﭐ َﻥﻮُﺤِﺌَّٰٓﺴﻟﭐ
َﻥﻭُﺮِﻣٓﺄۡﻟﭐ ِﻑﻭُﺮۡﻌَﻤۡﻟﭑِﺑ َﻥﻮُﻫﺎَّﻨﻟﭐَﻭ
ِﺮَﻜﻨُﻤۡﻟﭐ ِﻦَﻋ َﻥﻮُﻈِﻔَٰﺤۡﻟﭐَﻭ ِﺩﻭُﺪُﺤِﻟ
ِۗﻪَّﻠﻟﭐ ِﺮِّﺸَﺑَﻭ َﻦﻴِﻨِﻣۡﺆُﻤۡﻟﭐ
﴾١١٢ ‏[:ﺔﺑﻮﺘﻟﺍ ١١٢ ‏]
‘‘তারা আল্লাহর
দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, আল্লাহর
গোলামীর জীবন-যাপনকারী। তাঁর
প্রশংসা উচ্চারণকারী, তাঁর জন্য
যমীনে পরিভ্রমণকারী, তাঁর
সম্মুখে রুকু ও সিজদায় অবনত। সৎ
কাজের আদেশ দানকারী, অন্যায়ের
বাধা দানকারী এবং আল্লাহর
নির্ধারিত সীমা রক্ষাকারী।
হে নবী, তুমি এসব মুমিনদের সুসংবাদ
দাও।”[14]
>[1] সূরা আল-মায়িদাহ:২৭।
[2] সূরা আন-নাহল:৩৬।
[3] সূরা ইবরাহীম:১।
[4] সূরা যিলযাল:৭-৮।
[5] সূরা ইনফিতার:১১-১৯।
[6] সূরা ইনফিতার:৬।
[7] সূরা আত তাহরীম:৬।
[8] সূরা আল মায়িদাহ:২।
[9] তবে বর্ণনাটি দুর্বল।
[10] সূরা আল আছর”১-৩।
[11] সূরা আল আরাফ: ১৫৭।
[12] ইমাম মালিক, মুয়াত্তা ৫/২৫১।
[13] সূরা আত তাওবা: ৭১।
[14] সূরা আত তাওবা:১১২।
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. Peace Way - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger